আজ শুক্রবার, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইস্যু পেলেই সক্রিয় ইসলামী দলগুলো

বিশেষ প্রতিবেদকঃ

নারায়ণগঞ্জের ইসলামী সমমনা দলগুলো ক্রমশই ইস্যু ভিত্তিক সংগঠনে পরিনত হচ্ছে। ধর্মীয় বিষয়ে কোন একটি ইস্যু প্রকাশ্যে চলে এলেই তাদের সরগরম হতে দেখা যায়। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো যেসকল বিষয়কে সামনে নিয়ে বার বার সক্রিয় হয় সে বিষয়ে বরাবরই উদাসীন থাকেন ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা। অথচ দিনের পর দিন তারা নিজেদের রাজনৈতিক সচেতন দাবী করে ক্ষমতায় আসীন হতে চান।

সবশেষ ২১শে আগস্ট রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবীতে নারায়ণগঞ্জ শহরে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদ। তবে আদালতে দায়ের করা রিটটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় সেই বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেন তারা। এদিকে করোনাকালীন রাজনৈতিক দলগুলো রিজেন্ট সাহেদ, জেকেজি, খানপুর হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপন সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সক্রিয় হয়েছিলো। সেসময়ে রাজনৈতিক সচেতন দাবী করা ধর্মীয় নেতারা ছিলেন নীরব ভূমিকায়। তাদের এমন আচরণ প্রশ্ন তুলেছে আদৌও কতটা রাজনৈতিক ভাবে সচেতন তারা।

সংশ্লীষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূলত উপমহাদেশে ইসলাম ধর্মের অনুশাসনকে পুঁজি করে রাজনীতিতে আবির্ভাব ইসলামী দলগুলোর। উদ্দেশ্য আল্লাহর প্রেরিত নির্দেশনা অনুযায়ী শাসন দেশে প্রতিষ্ঠা করা। আর এর লক্ষ্যে মাদ্রাসা বিভাগের ছাত্রছাত্রী তাদের স্থায়ী ভোটের একটি বিরাট অংশ। সাধারণ ধর্মকর্ম পালন করা মুসলমানরা তাদের ভোট ইসলামী দলের ভেতর পরার সম্ভাবনা কম থাকায় মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে বেশ নিশ্চিন্তে থাকেন তারা। আর সে কারনেই বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে মাদ্রাসা লাইনে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করার জন্য অভিভাবকদের অনুপ্রাণিত করে থাকেন বলে মন্তব্য সচেতন অভিভাবদের।

কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে সচেতন না থাকলে এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারলে সেই সচেতনতা কোন কাজে আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন অনেকেই। রাজনীতির মাঠে ধর্মীয় বিষয় সম্পৃক্ত থাকলে সেটি তিলকে তাল বানিয়ে সাধারণ মানুষের সামনে উপস্থাপন করলেও মূল্যবৃদ্ধি, সামাজিক সমস্যা, জনদুর্ভোগ ও দুর্নীতি নিয়ে তেমন সোচ্চার হন না। শুধু ইসলামী দলগুলোই নয়, এসকল দলের সাথে সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করে আসা ছাত্র সংগঠন গুলোও ছাত্রদের অধিকার আদায়ে তেমন সক্রিয় নন।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনীতিতে ইসলামী দলগুলোর নেতৃবৃন্দরা নিজেদের ক্লিন ইমেজ দাবী করে সমাজে টিকে থাকার চেষ্টা করলেও রাজনৈতিক ভাবে যে সচেতন নন তা তারা নিজেরাই বার বার তুলে ধরছেন। একপেশে ইস্যু নিয়ে আলোচনায় থাকার চেষ্টা করে রাজনীতির মাঠে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখা যায় না। সুতরাং নিজেদেরকে ধর্মীয় বিষয়ের পাশাপাশি সামাজিক বিষয়েও অগ্রসর ভূমিকা রাখতে হবে।